চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে অবস্থিত ইস্পাত নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান কবির স্টিল লিমিডেটের (কেএসআরএম) শিপ ইয়ার্ড সাময়িকভাবে বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে শিল্প মন্ত্রণালয়। বারবার শ্রমিক মৃত্যুর অভিযোগ ওঠার পর মন্ত্রণালয় এই নির্দেশ দেয়। শিপইয়ার্ড বন্ধের পাশাপাশি শ্রমিক নিহতের ঘটনা তদন্তে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে।
আজ শিল্প মন্ত্রণালয়ের সহকারী সচিব সোহেলা নাসরীন স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এই তথ্য জানানো হয়।
গত ১ ফেব্রুয়ারি রাতে আরিফুল ইসলাম সুজন (২৮) নামে কেএসআরএম’র শিপ ইয়ার্ডের এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়। জাহাজে কাজ করার সময় নিচে পড়ে আরিফের মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিক সুরতহাল রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়। কিন্তু প্রতিষ্ঠান এই দায় এড়াতে উক্ত শ্রমিক হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন বলে প্রমাণের চেষ্টা করে আসছিল। এই ঘটনার পর পরই নড়েচড়ে বসে শিল্প মন্ত্রণালয়।
অদক্ষ শ্রমিক নিয়োগ, শ্রমিক নিরাপত্তা নিশ্চিত না করা, ঘন ঘন দুর্ঘটনায় শ্রমিক মৃত্যুর ঘটনায় এ স্থগিতাদেশের নির্দেশ দিয়েছে মন্ত্রণালয়।
শিল্প মন্ত্রণালয়ের চিঠিতে বলা হয়েছে, গত ১ ফেব্রুয়ারি কেএসআরএম এর শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ডে একজন শ্রমিক নিহত হয়। ফলে দেশে ও বিদেশে জাহাজ পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পের বিষয়ে নেতিবাচক ধারণার সৃষ্টি হচ্ছে। এ অবস্থায় পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত কবির স্টিল লিমিটেডের শিপ ইয়ার্ড সাময়িকভাবে বন্ধ থাকবে।
এছাড়া শ্রমিক নিহতের বিষয়ে আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে কবির স্টিল লিমিটেডের ব্যাখ্যাও চেয়েছে শিল্প মন্ত্রণালয়।
দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধান, দায়দায়িত্ব নির্ধারণ করে সাত কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করবে তদন্ত কমিটি।
এর আগে ২০২০ সালের মার্চে কেএসআরএম গ্রুপের মালিকানাধীন খাজা ইয়ার্ডে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা না থাকা, অদক্ষ শ্রমিক এবং অসচেতনতায় বারবার দুর্ঘটনার কারণে জাহাজ আমদানি নিষিদ্ধ করেছিল শিল্প মন্ত্রণালয়।
কেএসআরএম এর শিপ ইয়ার্ডে শ্রমিক মৃত্যুর ঘটনা লেগেই আছে। তবে গত ১ ফেব্রুয়ারি কেএসআরএমের শিপ ইয়ার্ডে শ্রমিক নিহতের ঘটনায় দেশ-বিদেশে বাংলাদেশের জাহাজ পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পের ওপড় নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে বলে মনে করছে মন্ত্রণালয়। সেজন্য এই নির্দেশনা দেওয়া হয়।
মতামত দিন